তারকা শিল্পীরাই ভাল ছবির অন্তরায়
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:২৪:২৯,অপরাহ্ন ২০ আগস্ট ২০১৫ | সংবাদটি ৩৪৮ বার পঠিত
বিনোদন প্রতিনিধি,
তারকা শিল্পীরাই এখন ভাল ছবির জন্য প্রধান অন্তরায় বলে চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা মনে করছেন। শিল্পীরা মুখে মুখে সহমর্মিতার কথা বললেও কাজের ক্ষেত্রে হাঁটেন উল্টো পথে। কোন ছবিতে শাকিব খান থাকলে অন্য কোন নায়ক অভিনয় করতে চান না গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র থাকলেও। প্রযোজক-পরিচালক চেষ্টা করেও পান না নিজেদের পছন্দের মতো তারকা। ফলে তাদের ছুটতে হয় কলকাতায়। কলকাতার সিনেমাজগত টালিগঞ্জ থেকে যে শিল্পী আনা হচ্ছে তারা অভিনেতা হিসেবে অনেক দক্ষ হলেও বাংলাদেশের সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের কাছে তাদের খুব একটা পরিচিতি নেই। ফলে যে লক্ষ্য নিয়ে সিনেমাটি শুরু করতে চেয়েছিলেন প্রযোজক-পরিচালক, দেখা গেলো প্রথমেই সেই লক্ষ্যে বড় একটা বাধা পড়ে গেছে। দেখা যাচ্ছে, যে নায়কটি শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করতে আপত্তি জানালেন- অবস্থান, জনপ্রিয়তা, চাহিদা ইত্যাদি সবদিক থেকেই সেই নায়কের অবস্থান শাকিব খানের তুলনায় অনেক নিচে। চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীদের মতো তুলনা করার মতো কোন হিসাবেই পড়েন না। তারপরও নায়কটি এমন করলেন কেন? এমন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। প্রশ্ন ওঠেও। উত্তর একটাই- আত্মবিশ্বাসের অভাব। নিজের প্রতি আস্থা নেই নায়কের। সাহস নেই শকিব খানের পাশে দাঁড়ানোর। শুধু নায়কদের ক্ষেত্রেই নয়, নায়িকাদের ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা যায়। এক সময়ের সেরা দুই নায়িকা মৌসুমী-শাবনূরকে একসঙ্গে করতে প্রযোজক-পরিচালকদের অনেক সময় লেগেছে। দুজনে এক হওয়ার পর চলচ্চিত্র পেলো ‘মোল্লা বাড়ির বউ’-এর মতো একটি ছবি। মৌসুমীর সঙ্গে পপি অভিনয় করেছেন একটিমাত্র ছবিতে। যা এখনও মুক্তি পায়নি। শাবনূর-পপিকে তো কখনোই একসঙ্গে করা সম্ভব হয়নি। এখন অপু বিশ্বাসের মতো প্রতিষ্ঠিত নায়িকা পরীমনির মতো নতুন নায়িকার সঙ্গে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হননি। আরেক নায়িকা ববি রাজি হয়েছেন। কিন্তু কোন গানের শুটিং করতে রাজি হননি। সবার মধ্যেই কেমন যেন একটা ‘জ্বালা জ্বালা’ ভাব। অথচ আগে একসঙ্গে কবরী-শাবানা, শাবানা-ববিতা, রাজ্জাক-সোহেল রানা-আলমগীর, ফারুক, জাফর ইকবাল, উজ্জল, ইলিয়াস কাঞ্চন, মান্না, রুবেল, রিয়াজ-ফেরদৌস একসঙ্গে কাজ করেছেন। এমনকি সোহেল রানা অভিনীত ‘মাসুদ রানা’ ছবিতে নায়করাজ রাজ্জাক অতিথি চরিত্রে একটি গানের অংশবিশেষেও অভিনয় করেছেন। সোহেল রানা, ববিতা, রুবেল এখনও অতিথি চরিত্রে অভিনয় করছেন। সমস্যা শুধু এখনকার শিল্পীদের মধ্যে। কেউ কারও সঙ্গে সহজেই কাজ করতে রাজি হন না। ইমন-নিরব যখন বিজ্ঞাপনে সুপারহিট। দুজনেই একই সময়ে চলচ্চিত্রে এসেছেন। একজন আরেকজনের বন্ধুও। তারপরও অনেক নির্মাতা ইমন-নিরবকে দিয়ে একসঙ্গে ছবি বানাতে পারেননি। কিন্তু যখন তারা এক হলেন, তখন তাদের দিন প্রায় শেষ। দর্শকদের কাছে তাদের চাহিদাটা আগের মতো থাকলো না। অথচ একসঙ্গে অভিনয় করলে ইমন-নিরব দুজনেই একটা অবস্থান গড়তে পারতেন বলে চলচ্চিত্রবোদ্ধারা মনে করেন। তাদের মতে চলচ্চিত্রের ভালর জন্য, নিজেদের ভালর জন্য, নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী মিলেমিশে কাজ করলে চলচ্চিত্রেরই শুধু মঙ্গল হবে না, শিল্পীদেরও মঙ্গল হবে এবং অভিযোগ থেকে তারকাশিল্পীরা মুক্ত হবেন।