‘গান এখন ডিজিটাল নির্ভর হয়ে গেছে’
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩০:০৫,অপরাহ্ন ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | সংবাদটি ৩১২ বার পঠিত
চলতি সময়ের জনপ্রিয় গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও শিল্পী শফিক তুহিন। প্রথমে গীতিকার হিসেবে এবং পরবর্তীকালে একে একে সুরকার, সংগীত পরিচালক ও শিল্পী হিসেবেও সফল তিনি। তার গীতিকবিতায় কিংবদন্তি থেকে শুরু করে চলতি প্রজন্মের শিল্পীদের কণ্ঠেও অনেক গান জনপ্রিয়তা পেয়েছে। স্বীকৃতিস্বরূপ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। এ সময়ের ব্যস্ততা, নতুন কাজ ও গানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন শফিক তুহিন। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন
এখনকার ব্যস্ততা কি নিয়ে?
কয়েকটি মিশ্র অ্যালবামের কাজ করছি এখন। পাশাপাশি মেধাবী কণ্ঠশিল্পী টিনা মোস্তারির সঙ্গে একটি দ্বৈত অ্যালবামের কাজ করছি। এর সব গানের সুর করেছি আমি। এখানে আমার ও টিনার চারটি দ্বৈত ও দুটি করে একক গান থাকবে। আমি ছাড়াও এখানে গান লিখছে জুলফিকার রাসেল, আবু সায়েম চৌধুরী, সোমেশ্বর অলি প্রমুখ। এছাড়াও ন্যান্সি ও ডলি সায়ন্তনি সহ কয়েকজন শিল্পীর একক অ্যালবামের সুর-সংগীতায়োজনের কাজ করছি।
ঈদে কি তাহলে নতুন গান আসছে?
ঈদের নতুন গানের কাজ করছি। ঈগল মিউজিকের ব্যানারে প্রকাশ পেতে যাওয়া ‘প্রেমকাব্য’ নামক একটি ভিন্নধর্মী অ্যালবামে তিনটি গান গেয়েছি। অ্যালবামে আরও গান করছে ইমরান ও বেলাল খান। এখানে আমার দুটি একক ও একটি দ্বৈত গান থাকছে। একক গানগুলোর সুর করছেন ফাজবীর তাজ। সংগীতে আছেন সজীব দাশ। আর দ্বৈত গানটিতে আমার সঙ্গে গেয়েছে নদী। সুর করেছি আমি। সংগীত করেছেন জেকে। এটি খুব অন্যরকম একটি গান হয়েছে।
একক অ্যালবামের কি খবর?
চলতি বছরের পহেলা বৈশাখে আমার নতুন একক ‘আঙুলে আঙুল’ প্রকাশ পেয়েছিলো। গানগুলো শ্রোতারা অনেক পছন্দ করেছেন। ‘বেহায়া মন’ গানটির জন্য বেশ প্রশংসা পাচ্ছি। এ অ্যালবাম থেকে ‘স্বার্থপর’ শীর্ষক আরও একটি গান মিউজিক ভিডিও করবো। ঈদেই আশা করছি প্রকাশ পাবে এটি। তবে আপাতত নতুন এককের পরিকল্পনা করিনি। ‘আঙুলে আঙুল’ কে আরও সময় দিতে চাই।
প্লেব্যাক তো নিয়মিত করছেন?
হ্যাঁ, প্লেব্যাকে নিয়মিত কণ্ঠ দিচ্ছি। পাশাপাশি প্লেব্যাকে সুর-সংগীতও করছি। চলচ্চিত্রের গানে শ্রোতাদের বেশ ভাল সাড়া পেয়েছি। এখন কাজ করছি ‘প্রেমের কাজল’ নামে একটি ছবির। এর সব গানের সুর-সংগীত আমি করছি। এছাড়াও ‘ভালবাসার গল্প’, ‘সুইটহার্ট’, ‘অনেক দামে কেনা’, ‘মনের মতো মানুষ পেলাম না’ ছবিগুলোর গান করেছি। এ ছবিগুলো মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
আপনি প্রথমে গীতিকার হিসেবে এবং পরবর্তী সময়ে সুরকার ও শিল্পী হিসেবেও সফলতা পেয়েছেন। দেড় যুগ ধরে একই গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন। এর রহস্যটা কি?
আসলে কোন কিছু করতে গেলে তার প্রতি ভালবাসা থাকতে হবে। গানের সঙ্গে ভালবাসাবাসি করেই কেটে গেল দেড় যুগ। তবু মনে হয় এইতো সেদিন বুঝি শুরু করেছিলাম। তাই রহস্যের আসলে কিছুই নেই। গানের প্রতি সত্যিকারের ভালবাসা থাকলেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়া সম্ভব। সর্বোপরি বলবো শ্রোতারা চেয়েছেন বলেই আমি এখনও কাজ করে যাচ্ছি। কাজ করে যেতে চাই আরও দীর্ঘ সময়।
আপনি অডিও ইন্ডাস্ট্রির স্বর্ণযুগ দেখেছেন, আবার এখনকার মলিন রূপও দেখছেন। আপনার কাছে কি মনে হচ্ছে? কোথায় যাচ্ছি আমরা?
আগে ক্যাসেট প্রকাশ হলেই সবদিকে তা ছড়িয়ে পড়তো। গান বিনোদনের একটি অনিবার্য মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের মাধ্যমে মানুষের মনেরও পরিবর্তন হয়েছে। গান এখন ডিজিটালনির্ভর হয়ে গেছে। বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম থেকে আয় আসছে। তবে এ প্লাটফরমটি এখনও শক্তভাবে দাঁড়ায়নি। সমন্বয়হীনতা রয়েছে। আমার মনে হয় এক ছাদের নিচে বসে সমস্যার সমাধান করা উচিত। কারণ সমন্বয়হীনতার অভাবে সংগীতাঙ্গন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিল্পী, সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক- কেউই এ ক্ষতি থেকে রেহাই পাচ্ছি না।
বিয়ে করছেন কবে?
বিয়ে করার তো বয়সই হয়নি। তাই এখনও ভাবছি না। দেখা যাক সামনে কি হয়!
প্রেম করছেন?
প্রেম তো প্রতিনিয়তই চলছে। ভালবেসেই তো বেঁচে আছি।