‘নাটক শিল্প প্রায় বিপর্যস্ত’
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:৪৫:৫২,অপরাহ্ন ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | সংবাদটি ৩৩৫ বার পঠিত
টিভি নাটকের জনপ্রিয় এক নাম শাহরিয়ার নাজিম জয়। ধারাবাহিক ও খ- নাটকে নিয়মিত কাজ করছেন। দীর্ঘদিনের পথচলায় এখন হয়ে উঠেছেন একজন অভিজ্ঞ অভিনেতা। শুধু তাই নয় অভিনয়ের পাশাপাশি নির্মাতা হিসেবেও রয়েছে তার সুপরিচিতি। তবে শুধু নাটকের ফ্রেমেই বন্দি থাকেননি জয়। এখন নামের পাশে যোগ করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতার তকমা। আসছে কোরবানির ঈদে মুক্তি পাচ্ছে জয়ের পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘প্রার্থনা’। এ ছবি ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ে আজকের ‘আলাপন’-এ কথা বলেছেন তিনি। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মারুফ কিবরিয়া
আপনার পরিচালিত প্রথম ছবি প্রসঙ্গে কিছু বলুন…
অনেক সুন্দর একটা গল্প বলার চেষ্টা করেছি। বর্তমান সময়ের চলচ্চিত্রে গল্পের অনেক সংকট। সে জায়গা থেকে একটা ভাল গল্প নিয়ে দর্শকের কাছে আসছি। গল্প সংকটের এই সময়ে আমি একটা অসাধারণ গল্পই বলতে পেরেছি। এ গল্পটা আমাদের সমাজের নানা বাস্তব চিত্র নিয়ে তৈরি হয়েছে। আমি খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছি। এ ধরণের ছবি দর্শক দেখে আনন্দ পাবেন। আমি বলব না দেখা উচিৎ। কিন্তু আমি বলবো তারা যদি হল বাঁচাতে চান বা সিনেমা শিল্পটা বাঁচাতে চান তাহলে ছবি দেখতে হবে। শুধু মেকাররা নির্মাণ করলেই হবে না। একটা ভাল সিনেমাকে প্যাট্রোনাইজ করতে হবে। সে জন্য সবার সহযোগিতার দরকার। দর্শকরা আমার সঙ্গে থাকবেন বলেই প্রত্যাশা করছি।
এটা তো প্রথম চলচ্চিত্র নির্মাণ। কেমন অভিজ্ঞতা হলো?
অনেক ভাল অভিজ্ঞতা হয়েছে। চলচ্চিত্রের জায়গাটাতো অনেক বড়। সেটা অভিনয় করার ক্ষেত্রে আগেই বুঝতে পেরেছিলাম। তবে নির্মাণের ব্যাপারটা তার চেয়ে আলাদা। একটু কঠিনও বটে। বলতে পারেন এটা আমার জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জের ব্যাপার ছিল। অবশ্য সব ঠিকভাবে শেষ করতে পেরেছি। কারণ আমি কাজের ব্যাপারে বরাবরই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। এখনও আছি।
এরপর কি নতুন কোন ছবি নির্মাণের পরিকল্পনা আছে?
দেখুন আমি ২০১০ সালে প্রথম নাটক নির্মাণে আসি। এ পর্যন্ত আমার নির্মিত ৫০টি নাটক প্রচার হয়ে গেছে । আমি মনে করি, এমন একটি সময় এত চ্যানেল আর বিজ্ঞাপনের ভিড়ে নাটক শিল্প প্রায় বিপর্যস্ত। দর্শক একটানা টিভির সামনে বসে নাটক দেখবেন, সেই ধৈর্য্যটা এখন নেই বললেই চলে। অস্থিরতা বিরাজমান। মানুষ নাটক বিমুখ হয়ে যাচ্ছেন। সে জায়গা থেকে ফিল্মে একটা সম্ভাবনা রয়েছে। আর দর্শকও হলমুখি হচ্ছেন। তাই সে কারণে আমিও অনেকটা অনুপ্রাণিত। এমন অবস্থায় ভাল একটি গল্প নিয়ে দর্শকের কাছে আসতে পারলে তাদের সুস্থ বিনোদন দেয়া যাবে। আর তাই আমারও পরিকল্পনা রয়েছে আরও কিছু ছবি নির্মাণ করার।
নাটক শিল্প বিপর্যস্ত বললেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কি?
টিভি নাটকে দর্শক নেই। ভারতীয় চ্যানেলের দিকে ঝুঁকছেন সবাই। দর্শকই বা কি করবেন। এত বিজ্ঞাপন প্রচার হলে দর্শক নাটক দেখবেন কিভাবে। তবে সে জায়গা থেকে গাজী টিভি আগামী ঈদে বিরতিহীন বিনোদন দেয়ার লক্ষ্যে একটি বড় উদ্যোগ নিয়েছে। এটা শুধু বড় বললে ভুল হবে। সাহসী উদ্যোগ বলতে পারি। এটা একা গাজী টিভি করলে চলবে না। যার যার জায়গা থেকে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে যদি দর্শক স্বার্থে এগিয়ে আসেন তবেই উন্নতি সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি।
এখন নাটকে গল্প ভাল হচ্ছে না বলেও একটা অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়…
দেখুন, এখন যে কেউ চাইলেই নাট্যকার হতে পারেন। আপনি নিজেও পারবেন। গ্রাম থেকে উঠে এসেও কেউ কেউ নাটক লিখে ফেলছেন। তাই সে জায়গায় তো নাটকের মান খারাপ হবেই। প্রশ্ন উঠে মেধা নিয়ে। এসব বিতর্ক চলছেই। তাই এখানে কিছু ভারসাম্যের দরকার। কারা সত্যিকারের নাট্যকার সে ব্যাপারে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মেধাবীদের যাচাই করতে হবে। যাকে তাকে ধরে নাট্যকার বানিয়ে দিলে নাটকের বারোটা স্বাভাবিকভাবেই বেজে যাবে। এ নিয়ে সবার বসা উচিৎ বলেও আমি মনে করি। শিল্পটাকে বাঁচাতে হলে সবাইকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে।
আপনার ব্যাক্তিগত জীবন কেমন যাচ্ছে?
আলহামদুল্লিাহ, অনেক ভাল। স্ত্রী সন্তান সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে আমি বেশ ভাল আছি। সবাই দোয়া করবেন আমার জন্য।