গরুর মাংস খাওয়ায় পিটিয়ে হত্যা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:০৩:৪০,অপরাহ্ন ২২ অক্টোবর ২০১৫ | সংবাদটি ২৮৯ বার পঠিত
ভারতে গরুর মাংস কাছে রাখা ও তা ভক্ষণ করার অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। এটা কোন স্বাভাবিক ঘটনা ছিল না। সম্প্রতি দিল্লির কাছে দ্রাদ্রিতে বিসাদা গ্রামে ওই অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয় মোহাম্মদ আখলাককে। প্রহৃত হন তার নিকটজনরা। বাড়িতে গরুর মাংস রেখেছেন এবং তা তিনি রান্না করে খেয়েছেন এ গুজব ছড়িয়ে দিয়ে একদল মানুষ তার বাড়িতে তার ওপর হামলা করে। তাদের প্রহারে নিহত হন মোহাম্মদ আখলাক নামের ওই মুসলিম। এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনা তদন্তে নামে ন্যাশনাল কমিশন ফর মাইনরিটির একটি প্যানেল। তারা তাদের রিপোর্টে বলেছেন, মোহাম্মদ আখলাককে হত্যা করা হয়েছে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে। এতে বলা হয়েছে, ওই পরিকল্পনা করা হয় একটি মন্দিরে বসে। তবে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রীরা বলেছেন, স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ছিল ওই হামলা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, সম্প্রতি গরুর মাংস খাওয়া বা পাচার করার অভিযোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন হত্যা করেছে মুসলিম সম্প্রদায়ের তিন ব্যক্তিকে। এর মধ্যে আখলাককে হত্যার ঘটনায় তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ধর্মীয় সহনশীলতা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। তাকে হত্যার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিন্দা জানান নি বলে তার সমালোচনা ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। এর দু’ সপ্তাহ পরে তিনি এ ঘটনাকে দুঃখজনক ও অপ্রত্যাশিত বলে আখ্যায়িত করেন। রিপোর্টে বলা হয়েছে, উত্তর প্রদেশের খামারে কাজ করতেন মোহাম্মদ আখলাক। গত মাসে যখন তার ওপর হামলা হয় তার আগে তিনি তার ছেলের পাশে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। এ সময় লাঠি, তলোয়ার ও পিস্তল হাতে একদল লোক তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা অভিযোগ করে, আখলাকের নয় সদস্যের পরিবার গরু জবাই করে এর মাংস খেয়েছে। আখলাক ও তার ছেলেকে লাঠি দিয়ে প্রহার করা হয়। লাথি মারা হয়। ছুরিকাঘাত করার হয় বার বার। এ সময় তার বাসার ফ্রিজে কিছু মাংস পাওয়া যায়। বলা হয়, সেটা ছিল গরুর মাংস। তারা এ মাংস খেয়েছে। কিন্তু পরে পরীক্ষায় দেখা যায় ওই মাংস গরুর নয়, ছাগলের। অনুসন্ধানকারীরা তাদের রিপোর্টে বলেছেন, আখলাক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সহিংস হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। এ হামলার পরিকল্পনা নেয়া হয় স্থানীয় একটি মন্দিরে বসে। মন্দির থেকে আখলাকের বাড়িতে মাংস থাকার যে ঘোষণা দেয়া হয় সেটা ছিল উস্কানি। যখন আখলাকের ওপর ওই হামলা হয় তখন গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই ছিলেন ঘুমে। ফলে কয়েক মিনিটের ভিতরে আখলাকের ওপর হামলা চালানো অতোগুলো মানুষ একত্রিত হওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার ছিল না। তবে এ বিষয়ে পুলিশের একটি অনুসন্ধান চলমান।