ভারতে মাফিয়া চক্রের খপ্পরে বাংলাদেশী নারী
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৪০:৫৬,অপরাহ্ন ২৬ অক্টোবর ২০১৫ | সংবাদটি ২৭৫ বার পঠিত
ভারতে গিয়েছিলেন বেড়াতে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে দেহব্যবসা মাফিয়া চক্রের খপ্পরে পড়েন। অবর্ণনীয় নির্যাতন, নিগ্রহের শিকার হন। ভয়ঙ্কর চক্রটির হাত থেকে অবিশ্বাস্যভাবে পালিয়ে আসতে সক্ষম হন ৩৪ বছরের ওই বাংলাদেশী নারী। ভারতের দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে ঘটনাটি উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বাংলাদেশীকে কোজিকোড়ে জেলার এরানিপ্পালাম শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে আটকে রেখে এক সপ্তাহ ধরে চরম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। ২৭শে মে সেখান থেকে পালিয়ে আসার পর নেদাক্কাভু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ওই নারী। পুলিশের কাছে দেয়া বিবৃতিতে তিনি জানান, অ্যাপার্টমেন্টের বাথরুমে তাকে আটকে রাখা হয়। খাবার তো দূরে থাক পানিও খেতে দেয়া হয়নি তাকে। কোজিকোড়ে জেলার অতিরিক্ত বিশেষ সেশন আদালতের সামনে নাদাক্কাভু পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর প্রকাসন পাদন্নায়িলের চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে অভিযুক্ত আসামি আটজন। প্রথম আসামি নওফাল ওই বাংলাদেশী নারীকে অপহরণ করে কোজিকোড়েতে নিয়ে আসে। জোরপূর্বক তার পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে আটকে রাখে ওই অ্যাপার্টমেন্টে। যে ভবনে তাকে আটকে রাখা হয় সে ভবনের ৫ তলার নিবাসী সুহেইল ওরফে বাভাক্কা (৪৪) ও তার স্ত্রী আম্বিকা ওরফে সাজিথা (৩৫) যথাক্রমে ২য় ও ৩য় আসামি। এরা দুজন ওই বাংলাদেশী নারীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়। আজ থেকে আদালতে মামলাটির বিচার শুরু হওয়ার কথা। বাংলাদেশের রামনগরের নিবাসী ওই নারী। তার স্বামী রাজারঘাটে অটোরিকশা চালান। তাদের তিনটি মেয়ে আছে। তিনি দর্জির কাজ করতেন। ১৩ই মে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে ভারতে এসেছিলেন হাজি আলি মসজিদ দেখতে। ট্রেনে করে শিয়ালদহ যাওয়ার সময় নওফাল দমদমে তার ওপর চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করে। জ্ঞান ফেরার পর নিজেকে বিবস্ত্র ও বাথরুমে আটক অবস্থায় আবিস্কার করেন। কান্নাকাটি, আর্তচিৎকারেও তিনদিন ধরে কেউ আসেনি। চতুর্থ দিন দুই পুরুষ ও এক নারী (নওফাল, সুহেইল ও সাজিতা) বাথরুমের দরজা খুলে। অনেকবার পোশাক চাইলেও তারা তা দেয়নি। এক সপ্তাহ ওই বাথরুমে আটকে রাখা হয়। তিন দিন খাবার ছাড়া রাখার পর প্রতিদিন একবার খাবার দেয়া হতো তাকে। বাংলাদেশী ওই নারী আরও জানান, কান্নাকাটি করলে অভিযুক্ত মহিলা তাকে মারধর করতো। তাকে মোবাইল ফোন দিয়ে বাংলাদেশে আত্মীয়দের ফোন করে সে ভালো আছে জানাতে বাধ্য করে। ২৭শে মে পালিয়ে আসার আগের দিন ওই ফ্লাটে পাচ ব্যক্তি এসে তাকে বাথরুম থেকে বেডরুমে নিয়ে গিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে। চার্জশিট অনুযায়ী, ৪র্থ, ৫ম. ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম আসামি সিদ্দিক (২৫), আবদুল করিম (৪৭), রিয়াস হাসাইনার (৩৪), আব্দুল রহমান (৪৫) এবং মইধু আহম্মেদ তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করে। আর তাদের কাছ থেকে অর্থ নেয় সুহেইল ও সাজিতা।