যার উছিলায় সিন্নি খাইলা, সেই ফকির চিনলা না
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০৬:০৩,অপরাহ্ন ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ১০৪৮ বার পঠিত
যার উছিলায় সিন্নি খাইলা,
সেই ফকির চিনলা না
স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে ক্ষমতায় এসে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ। ‘চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ উপহার দেয় জাতিকে। শিল্প ধ্বংস, চোরাচালান, মজুতদারী, ব্যাংক লুট, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের বিনাবিচারে পাইকারি হত্যা এবং জনগণের নিরাপত্তা বিপন্ন করে তারা সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরিণত হয় জনগণের প্রতিপক্ষে। সেই চরম ব্যর্থতা ঢাকতে তারা সব দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল পদ্ধতি চালু করে।
১৯৭৫ সালে বাকশাল নেতা খন্দকার মোশতাক আহমাদ সেনাবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের একটি বড় অংশের সমর্থনে এক রক্তাক্ত অভ্যুত্থানে ক্ষমতায় এসে সেই বাকশাল বিলুপ্ত করে দেন। তখন দেশ দলশূণ্য ও রাজনীতিহীন হয়ে পড়ে।
জিয়াউর রহমানের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণের পর তিনি অন্যান্য দলের সংগে আওয়ামীলীগেরও পুণর্জন্ম দেন। ভারত প্রবাসী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব গ্রহনের সুযোগও জিয়াউর রহমানই করে দিয়েছিলেন।
সেই আওয়ামীলীগ শহীদ জিয়াকে কিভাবে অবমূল্যায়নের চেষ্টা চালাচ্ছে তা সবাই খোলা চোখেই দেখতে পাচ্ছে।
ফখরুদ্দীনদের সামনে রেখে ২০০৭ সালে জেনারেল মঈনদের ক্ষমতা দখল প্রক্রিয়াকে সমর্থন দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। কিন্তু তাতেও প্রথমে কোনো লাভ হয়নি। তারা মাইনাস-টু ফর্মুলা নিয়ে অগ্রসর হয়। শেখ হাসিনা গ্রেফতার হন এবং আদালত প্রাঙ্গনে চরম হেনস্তা ও অসৌজ্যমূলক আচরণের শিকার হন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনার মুক্তি দাবি করেন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁর বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে অবৈধ শাসনকে প্রলম্বিত করার অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তারা জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে দেশে সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়।
সেই বেগম খালেদা জিয়ার সংগে বর্তমানে শেখ হাসিনা ও আওয়ামীলীগের চরম বৈরী ও নিষ্ঠুর আচরণ এক কলঙ্কের উপাখ্যান রচনা করে চলেছে।
এক গোপন সমঝোতার ভিত্তিতে ২০০৯ সালে জেনারেল মঈনের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর সার্বিক সহায়তায় নির্বাচনী বৈতরণী পেরিয়ে ক্ষমতা হাতে পান শেখ হাসিনা। তারপর সেনাবাহিনীর ৫৭ জন চৌকস অফিসার পিলখানা হত্যাযজ্ঞে মর্মান্তিক ও অসহায় ভাবে প্রাণ হারান। তাদের পরিবারের সদস্যরা পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হন। পিলখানায় সেনা অভিযান না চালানো, খুনীদের আপ্যায়ন, সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা ও অনেককে বিদেশে পালিয়ে যাবার সুযোগ করে দেয়ায় নানান প্রশ্নের জন্ম দেয়। সেই সব প্রশ্ন ক্ষোভের সংগে উচ্চারণের দায়ে আরো অনেকে চাকরি হারান। এরপর সেনাবাহিনীকে অগণতান্ত্রিক শক্তি হিসাবে উল্লেখ করে তাদের ক্ষমতা দখলের চক্রান্ত সম্পর্কে সজাগ থাকার আওয়ামী বয়ান এখন জাতিকে প্রায়ই শুনতে হয়।
বাংলা ভাষায় অনেক বছরের অভিজ্ঞতায় নানান উপমামূলক বাক্যমালার জন্ম হয়েছে। আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক সংষ্কৃতির সংগে লাগসই তেমনই একটি বাক্যবন্ধ উল্লেখ করা যায়। সেটি হচ্ছে: “যার উছিলায় সিন্নি খাইলা, সেই ফকির চিনলা না।”#