পরিবেশ বাঁচাতে রাস্তায় লাখো শিশু-কিশোরের বিক্ষোভ
প্রকাশিত হয়েছে : ৪:২৫:৫৩,অপরাহ্ন ১৬ মার্চ ২০১৯ | সংবাদটি ২৫৭ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে বিশ্বনেতৃবৃন্দের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বিক্ষোভ দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ শিশু-কিশোর রাস্তায় নেমে এসেছে। ব্যাংকক থেকে বার্লিন ও লাগোস থেকে লন্ডন পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের রাজধানীর শ্রেণীকক্ষগুলো ফাঁকা রেখে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এই বিক্ষোভ করে। বিশ্বের ১শ’রও বেশি দেশের স্কুল শিক্ষার্থীরা তাদের ধর্মঘটে সাড়া দেয়।
ইউরোপ, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা ও এশিয়ার রাস্তাগুলো শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে।এ সময় তারা ‘যদি আপনারা বড়দের মতো দায়িত্বশীল আচরণ না করেন, তবে আমরাই করব।’ ও ‘আপনারা আমাদের ভবিষ্যত ধ্বংস করছেন।’ লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করে ও শ্লোগান দেয়।তিন দশক ধরে সতর্কতা সত্ত্বেও কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা ২০১৭ সাল ও গত বছর অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
স্টকহোমে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়নপ্রাপ্ত ১৬ বছর বয়সী সুইডিশ কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গ সুইডিশ সরকারি টেলিভিশন এসভিটিকে বলেন, ‘আমরা গভীর সংকটের মধ্যে আছি। ভয়াবহ এই সংকটিকে কয়েক দশক ধরে অবহেলার চোখে দেখা হচ্ছে। এখনই যদি এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া না হয়, তবে অনেক দেরি হয়ে যেতে পারে।’
মন্ট্রিলে সবচেয়ে বেশি লোক জড়ো হয়। সেখানে আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার লোক মিছিলে যোগ দেয় বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন, শিকাগো, পোর্টল্যান্ড, অরেগোন ও মিনেসোটার সেন্ট পলে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস আইয়ার্সে মিছিলকারীরা ‘জলবায়ু পরিবর্তনের খবর মিথ্যে নয়’ সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করে।চিলির রাজধানী সান্টিয়াগো ও কলম্বিয়ার মেডেলিনে শিশু-কিশোররা রাস্তায় নামে।
বিশ্বের অন্যতম ঘন জনবসতিপূর্ণ নগরী দিল্লীতে ২শ’ শিক্ষার্থী বিক্ষোভে অংশ নেয়। তারা রঙিন ফিতে নাড়িয়ে প্রতিবাদ করে।১৬ বছর বয়সী ছাত্রী সৃজনী দত্ত বলেন, ‘আমরা কি হাত গুটিয়ে বসে থাকব নাকি আমাদের বিশ্বকে রক্ষায় কিছু করব তা আমাদেরকেই ঠিক করতে হবে।’
সিডনিতে ১৮ বছর বয়সী চার্লিস রিকউড জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অস্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন।তিনি আরো বলেন, ‘যদি পরিবেশের বর্তমান অবস্থা চলতে থাকে তবে খুব শিগগিরই আমরা আমাদের সাগরের পানিকে এক থেকে দুই ডিগ্রী বাড়তে দেখব। তখন স্বাভাবিকভাবেই পরিবেশ আর টেকসই থাকবে না, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে আর এভাবেই আমরা পুরো গ্রেট ব্যারিয়ার রিফকে হারাতে পারি।’
লন্ডনের মধ্যাঞ্চলের সড়কগুলোতে কয়েক হাজার শিশু-কিশোর বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা বিভিন্ন ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে মিছিলে অংশ নেয়।
জনাকীর্ণ পার্লামেন্ট স্কোয়ারে তারা ‘এখনই পরিবর্তনের সময়’ বলে স্লোগান দেয়। এরপর তারা ডাউনিং স্ট্রিট ও বার্মিংহাম প্রাসাদের পাশ দিয়ে মিছিল করে।লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাসিন্দা ১৫ বছর বয়সী জো ক্র্যাবট্রি বলে, ‘তারা আমাকে আমার গ্রহ রক্ষার প্রচেষ্টা থেকে ফেরাতে পারবে না।’
আয়োজনকারী সংগঠন ইয়ুথ ফর ক্লাইমেট জানায়, আনুমানিক ১০ লাখের বেশি শিশু-কিশোর এই মিছিলে যোগ দেয়। ফ্রাইডে ফর ফিউচার মুভমেন্ট জানায়, শুধু জার্মানীতেই ৩ লাখের বেশি শিশু-কিশোর মিছিল করে। কেনিয়ায় শিশু-কিশোররা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা আগামী দশকে প্লাস্টিকের ব্যবহার ‘উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস করার’ ব্যাপারে একমত পোষণ করে।