মসজিদে হামলাকারীকে ক্ষমা করে দিলেন স্ত্রী হারানো সিলেটের ফরিদ
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:৪৩:২৬,অপরাহ্ন ১৮ মার্চ ২০১৯ | সংবাদটি ৪২০ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক:: ক্রাইস্টচার্চ মসজিদের হামলায় হুইলচেয়ারে চলাফেরা করা ফরিদ আহমেদকে উদ্ধার করতে এসে প্রাণ হারান স্ত্রী হুসনা বেগম। এরপরেও ওই খিষ্টান জঙ্গির প্রতি কোনো ঘৃণা পোষণ করছেন না তিনি। তার মতে, ক্ষমাই হচ্ছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উপায়। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, আমি বলবো যে একজন ব্যক্তি হিসেবে তাকে ভালোবাসি।
২৮ বছর বয়সী ওই শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীকে তিনি ক্ষমা করবেন কিনা জানতে চাইলে বলেন, অবশ্যই। ক্ষমা, উদারতা, ভালোবাসা, যত্ম ও ইতিবাচকতাই হচ্ছে ইসলামের সবচেয়ে ভালো দিক।
শুক্রবার জুমার নামাজে এসে শ্বেতাঙ্গ জঙ্গি হামলায় অন্তত অর্ধশত মুসল্লি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে হুসনা বেগমও একজন। যখন নির্বিচার গুলি ছুটছিল, তখন নারী ও শিশু হল থেকে অনেককে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিলেন তিনি। ফরিদ আহমেদ বলেন, তার স্ত্রী চিৎকার করে করে সবাইকে পালানো পথ দেখাচ্ছিলেন।
আটকে পড়া নারী ও শিশুদের বাঁচাতে ওই নারী তখন বলছিলেন, ‘দ্রুত, এই পথে আসেন’। এভাবে বহু মানুষকে তিনি নিরাপদে চলে যেতে সহায়তা করেন। অন্যকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের কথা ভুলে গিয়েছিলেন তার স্ত্রী। ‘সবাইকে পথ দেখিয়ে তিনি আমার খোঁজে আসেন, কারণ আমি ছিলাম হুইল চেয়ারে। তিনি যখন মসজিদের ফটকের কাছে আসেন, তখনই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন’, বলে জানান ৫৯ বছর বয়সী ফরিদ আহমেদ।
১৯৯৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর থেকেই হুইলচেয়ারে চলাফেরা করতে হচ্ছে তাকে। শুক্রবারে ভয়াবহ গোলা গুলির মাঝেও প্রানে প্রাণে বেঁচে যান তিনি।ফরিদ আহমেদ বলেন, হামলাকারী যুবক এক ব্যক্তিকে তিন-চারবারও গুলি করেছেন। এতে আমরা সরে পড়তে সক্ষম হয়েছিলাম। এমনকি নিহত ব্যক্তির শরীরেও ফের গুলি করেছেন তিনি।
মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় স্ত্রীকে দেখতে পাননি বলে জানান ফরিদ আহমেদ। এক ব্যক্তির দেখানো ছবি দেখে স্ত্রীর মরদেহ শনাক্ত করতে পেরেছেন তিনি।