বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রভাব.
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:৪৩:১১,অপরাহ্ন ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ৬০৬ বার পঠিত
শেখ জাফর আহমদ, গ্রেটার ম্যানচেষ্টার
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ প্রতিষ্টান. যাতে সরকারের কোন হাত নেই. বাংলেদেশের সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদের অংশ হিসাবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশন ও সহযোগী কমিশনারদের নিয়োগ দিবেন এবং স্বাধীন শায়িত্ব শায়িত প্রতিষ্টান বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রধান শপথ বাক্য পাঠ করাবেন. বাংলাদেশের সৃষ্টি লগ্ন থেকে শুরু করে ৭২ এর সংবিধান অক্ষুন্ন রেখে প্রক্রিয়াটি চলে আসছিল. যদিও ৭৫ এর কালো রাতে স্বাধীন বাংলার স্থপতিকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসকে কুলষিত করে বিপদগামী,উগ্রবাদী কিছু সৈর শাষক সংবিধানের সেই ধারাকে ব্যহত করে নিজেদের মত রাষ্ট্র পরিচালনা করতে থাকে. অবশ্য তাদের নিজস্ব ইচ্ছা ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংবিধানের কিছু ধারাকে হালাল করে নেয়. বাংলার মুক্তি কামী ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী মানুষ এক সময় ফুঁসে উঠে, প্রায় দেড় দশকের পর অবসান হয় সকল সৈর শাষকের. ফিরে আসে আবার গনতান্ত্রিক দেশের গনতান্ত্রিক পদ্ধতি. অনুষ্টিত হয় বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে (সাবেক প্রধান বিচার পতি সাহাব উদ্দীনের আমলে) পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৯১সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারী. একি প্রক্রিয়ায় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয় ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন ( তত্তাবদায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান), অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয় ২০০১ সালের ১লা অক্টোবর (তত্তাবদায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন সাবেক বিচার পতি লতিফুর রহমান) এবং সর্বশেষ তত্তাবদায়ক সরকারের আমলে ( সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফখর উদ্দীন) নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর, যাতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলেগের বিশাল জয় হয়. স্বাধীনতার পক্ষের দল হিসাবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ তাদের মেয়াদের ৫ বছর পুর্ন হওয়ার পুর্বে, বিশ্বের উন্নত দেশের সাথে সামঞ্জশ রাখতে, বাংলাদেশের গনতন্ত্রেত গুনগত মান উন্নত করতে এবং বিগত তত্ত্বাবদায়ক সরকারের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, বাংলাদেশে সৈর শাষকের প্রভাবকে নির্মুল করতে, বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধন ও বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত দারা তত্ত্বাবদায়ক সরকার আইন বাতিল করা হয়. সেই আইন বলবৎ হওয়ার পর থেকে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারী রাষ্টের ক্ষমতা কারো কাছে হস্তান্তর না করে স্বাধীন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের আওতায় জাতীয় নির্বাচন হয়ে আসছে এবং সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন ও একি প্রক্রিয়ায় হবে. কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে যে সকল নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে হয়েছে তা কতটুকু নিরপেক্ষ হয়েছে? এবং রাজনৈতিক দলগুলো তা কি ভাবে মেনে নিয়েছে? নির্বাচন হওয়ার প্রাক্কালে এবং নির্বাচন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত সবাই নিরপেক্ষ হিসাবে মেনে নেয় কিন্তু নির্বাচনে পরাজয় হলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হয়. তখন পরাজিত দল ভিবিন্ন অজুহাত দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকরাকে দোষারোপ করতে থাকেন. প্রশ্ন হল রাষ্টের এত টাকা খরচ করে, ৩ মাসের জন্য জিডিপির হার নিম্ন করে, বিদেশী বিনিয়োগ কোম্পানীর সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, হরতাল ,জ্বালাও-পোড়ায়, অবরোধ এবং বন্ধু দেশ গুলোর সাথে সাময়িক ভাবে বন্ধুত্বের বন্ধন ছিন্ন করে কি লাভ??
তার ছেয়ে বরং বিশ্বের উন্নত দেশ ইউরোপ/আমেরিকার মত একটি স্বাধীন,নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের আওতায় নির্বাচিত সরকারের অধীনেই নির্বাচন হওয়াই শ্রেয়. তাতে করে মানসিক মুল্যবোধের উদয় হবে, জাতি হিসাবে খ্যাতি অর্জন করবে , রাজনৈতিক সহিংসতা দুর হবে, সর্বপুরি দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো সুদৃঢ় হবে. তাই দেশ মাতৃকার বৃহত্তর স্বার্থে দেশ প্রেমিক সকল নাগরিকের শ্লোগান হোক তত্বাবধায়ক সরকার নয়, নিরপেক্ষ, শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচন….!!