“বিশ্বনাথের পৌর মেয়রের নির্দেশে গাছ কাটায় প্রবাসীর সংবাদ সম্মেলন”
প্রকাশিত হয়েছে : ৬:০৭:৩৭,অপরাহ্ন ২২ মে ২০২৩ | সংবাদটি ৩৩৪ বার পঠিত
আব্দুল হামিদ খান সুমেদ:-
আসসালামুআলাইকুম ও আদাব
প্রিয় সাংবাদিক ভাইরা- আমি শামছুল ইসলাম। যুক্তরাজ্য প্রবাসী। বিশ্বনাথ পৌরসভার জানাইয়া দক্ষিন মসুলা গ্রামের বাসিন্দা আমি। দীর্ঘ দিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করলেও এলাকায় সামাজিকভাবে আমাদের অবস্থান ভালো। সমাজবদ্ধ মানুষ হিসেবে আমরা সবার সঙ্গে মিলেমিশে বসবাস করছি। সম্প্রতি আমি দেশে এসেছি আমাদের এলাকার মানুষের সুবিধার্তে একটি তিনতলা মসজিদ নির্মাণের জন্য। কিন্তু দেশে এসে পড়েছি দুষ্টচক্রের কবলে। ওই দুষ্টচক্রটি বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানকে দিয়ে আমার ও আমার পরিবারের সুনাম ধুলিস্যাত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাই। বিশ্বনাথ পৌর শহরে ওই দুষ্টচক্র মেয়র মুহিবুর রহমানকে কবজা করে শুধু আমিই নয়, গোটা পৌরসভায়ই অশান্তি ছড়িয়েছে। এতে করে শান্তির জনপদ বিশ্বনাথ ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছে বলে আমি মনে করছি।
সাংবাদিক ভাইরা- বিশ্বনাথ পৌরসভার জানাইয়া দক্ষিন মাসুল গ্রামে আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি রয়েছে। রামপাশা রোড ও বিশ্বনাথ হাবড়াবাজার মিরের চক সড়কের চৌমুহনীতে আমার পিতা সাজিদ উল্লাহর নামে আমাদের জমিতে একটি মার্কেট রয়েছে। অনেক আগে থেকেই এই মার্কেট বিদ্যমান। মার্কেটের সামনে খালি জায়গায় ৬টি বিশাল আকারের রেন্ট্রি গাছ রয়েছে। আপনারা জানেন- বিশ্বনাথ ক্রমেই বৃক্ষশূণ্য হয়ে পড়ছে। আগে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় গাছ ছিলো। এখন সেগুলো আর নেই, কেটে ফেলা হয়েছে। চৌমুহনী হওয়ার কারনে যাতায়াতকারী মানুষের সুবিধার জন্য এই গাছগুলো খুবই উপকারী। যাত্রী চাউনী না থাকায় গাছে ছায়ায় বসে যাত্রীরা বিশ্রাম নিতে পারেন। এই গাছগুলো আমাদের জমি অবস্থি। পাশে এলজিইডি সড়ক। সম্প্রতি রাস্তা সংস্কার কাজের নামে ওই অধশতাব্দিকালের পুরনো ৬টি রেন্ট্রি গাছের চোখ পড়ে বিশ্বনাথের মেয়র মুহিবুর রহমানের। তিনি গাছগুলো কেটে ফেলতে আমাকে মৌখিক নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে আমি আমার জমির পাশের সরকারী রাস্তার ভুমি চিহিৃত করণের জন্য গত ৯ই মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি আবেদন করি। ওই আবেদনে সরকারী সার্ভেয়ার নিয়োগের আবেদন জানাই। পাশপাশি ইউএনও মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করে সার্বিক বিষয় সর্ম্পকে অবগত করি।
জাতির বিবেক সাংবাদিক ভাইরা- ওই আবেদনে সুরাহা হওয়ার আগেই গত রোববার ১৪ই মে সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে তিনজন শ্রমিক গিয়ে গাছ কাটা শুরু করে। আমি ঘুম থেকে উঠার আগেই তিনটি গাছ কেটে ফেলে। দুপুর ১২ টায় আমি গিয়ে দেখি তারা চতুর্থ নম্বর গাছ কাটছে। এ অবস্থায় আমি শ্রমিকদের বাধা নেই। এবং কার নির্দেশে আমার ভুমিতে থাকা গাছ কাটা হচ্ছে; সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি। এ সময় শ্রমিকরা জানায়; বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের নির্দেশে গাছ কাটা হচ্ছে। এ সময় আমি বিশ্বনাথ থানা পুলিশের দ্বারস্থ হলে তারা গাছ কাটায় নিয়োজিত শ্রমিক কাদিপুর গ্রামের আব্দুল কালাম, রামপাশা গ্রামের রনি মিয়া ও শুকুর আলীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সন্ধ্যায় পৌরসভার কাউন্সিলর রফিক ও ফজর আলী গিয়ে ওই তিন শ্রমিককে তাদের জিম্মায় ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় আমি বাদি হয়ে বিশ্বনাথ থানায় লিখিত অভিযোগ দেই। সেটি সাধারন ডায়েরী হিসেবে পুলিশ গ্রহন করে রেখেছে।
সাংবাদিক ভাইরা- বিশ্বনাথ পৌর এলাকার মানুষ স্বাধীনতার পর থেকে একটি পৌরসভার জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন। সেই পৌরসভা হয়েছে। প্রায় ৬ মাস আগে ভোটে মেয়র ও কাউন্সিলররা নির্বাচিত হয়েছেন। বিশ্বনাথের উন্নয়নের দায়িত্বভার মানুষই তাদের দিয়েছে। অনেক আশা ভরসা নিয়ে মেয়র হিসেবে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমানকে মানুষ বিশ্বাস করেছে। কিন্তু বিগত ৬ মাস মেয়র হিসেবে মুহিবুর রহমান কী প্রতিদান দিচ্ছেন তার বিশ্বনাথের মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। এখন মেয়র মুহিবুর রহমানই বিশ্বনাথের মানুষের গলার কাটা। তিনি আইনের তোয়াক্কা না করে যা ইচ্ছা তাই করে বেড়াচ্ছেন। যার জ্বলন্ত প্রমান আমার এই ঘটনা। যেখানে এলাকার মানুষের জন্য নিরলসভাবে আমি ও আমার পরিবার নিরলসভাবে কাজ করছি সেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার কোনো আইনী বৈধতা ছাড়াই অর্ধশতাব্দির প্রাচীন তিনটি রেন্ট্রিগাছ তিনি কেটে ফেলেছেন। এরপর থেকে আমি ও আমার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এতে একজন প্রবাসী হিসেবে আমি সন্ত্রস্থ। কেটে ফেলা গাছে মুল্য ৭০ হাজার টাকা হলেও পথচারীদের বিশ্রামের জায়গা চিরতরে হারিয়ে গেলো।
প্রিয় সাংবাদিক ভাইরা- আমি একজন প্রবাসী হিসেবে মেয়র মুহিবুর রহমানের ক্ষমতার অপব্যবহারের এই প্রতিকার চাই। বিচার চাই। এর আগে একই ভাবে মেয়র মুহিবুর রহমান কয়েকজন প্রবাসীর সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে আমি শুনেছি। আমি আপনাদের মাধ্যমে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। গাছ কাটার অপরাধে মেয়র মুহিবুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। একই সঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সরকারী ভুমি চিহিৃত করণের যে আবেদন করেছিলাম সেটিরও দ্রুত নিস্পত্তি হোক। আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, এই কামনা করি।
বিনীত
(মো.শামছুল ইসলাম)