লন্ডনে বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ
প্রকাশিত হয়েছে : ৫:৪৮:৪৯,অপরাহ্ন ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ | সংবাদটি ৪২৭ বার পঠিত
লন্ডনে বিনম্র শ্রদ্ধায় ভাষা শহীদদের স্মরণ
৫২’র মহান ভাষা শহীদের শ্রদ্ধা আর মাতৃভাষার অকৃতিম ভালবাসা জানানোর মধ্য দিয়ে লন্ডনে পালান করা হল অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ব্রিটিশ-বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনস্থ আলতাব আলী পার্কের শহীদ মিনারে সোমবার প্রথম প্রহরে ১২টা ১ মিনিটে তিনি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, কাউন্সিলের স্পীকার কাউন্সিলার খালিস উদ্দিন, ডেপুটি স্পীকার কাউন্সিলার সাবিনা আক্তারসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এছাড়া ভাষা শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে শত শত মানুষের উপস্থিতি ঘটে।
এসময় তারা ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ ঐতিহাসিক এই গান সহ রাজনৈতিক দলগুলি তাদের রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। তবে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সাধারণ মানুষ দীর্ঘক্ষন লাইনে থেকে শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে দেরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানিয়েছেন ভিআইপি প্রটোকলে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে গিয়ে ভিআইপিদের ছবি তুলা ও লাইভ ফেইসবুকে প্রচার করতে গিয়ে এই দেরি হয়। এসময় লাইনে থাকা শত শত মানুষ চিৎকার করে এর প্রতিবাদ করেন।
এদিকে কাউন্সিল ও নিরাপত্তা কর্মীদের অতিরিক্ত কড়াকড়ি আরোপের কারনে মিডিয়া কর্মীরা ভিআইপি ছাড়া কোন সাধারণ মানুষের সাক্ষাৎকার নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনকি মিডিয়া কর্মীদের একটি নিদিষ্ট বাউন্ডারীর মধ্যে সীমিত পরিসরে রাখায় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন কারীদের ছবি ও ভিডিও করতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থহন। এঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন উপস্থিত সংবাদ কর্মীরা।
এদিকে শহীদ ব্যদিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পূর্বে সংবাদকর্মীদের জন বিগস বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারী এখানে পালিত হওয়ায় আমি আনন্দিত। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য এ দিনটি তাৎপর্যপূর্ণ। একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তিমূল। এই অমর একুশ হচ্ছে দেশে বিদেশে বাঙলাদেশী বংশদ্ভুত নতুন প্রজন্মের জন্য প্রেরণা। তিনি বলেন, এইদিনটি পালনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম ইতিহাস ও সংস্কৃতি জানার এবং চর্চা করার সুযোগ পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন বলেন, ভাষা শহীদরা হচ্ছেন বাঙালীর সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রেরনে। মূলত ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতার ভিত্তি রচিত হয়। তিনি শহীদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা সকল নাগরিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এসময়ে আরও ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটসের ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম, কাউন্সিলর র্যাচেল স্যান্ডার্স, কাউন্সিলর রাজীব আহমেদ, কাউন্সিলার রাবিনা খান, কাউন্সিলার আমিনুর রহমান, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরিফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমদসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব সভাপতি সৈয়দ নাহাস পাশা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়েরসহ সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ।
এছাড়া জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ সেন্টার, বিশ্বনাথ এডুকেশন ট্রাস্ট, ইতালিয়ান বাংলাদেশী এসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ ডিস্ট্রিক এসোসিয়েশনসহ অসংখ্য সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থেকে শহীদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।