বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মাহী বি চৌধুরী, তারেক রহমান দোষ কার? ফালতু সংলাপে কাজ হবেনা।
প্রকাশিত হয়েছে : ১০:০৮:৪৬,অপরাহ্ন ০৭ নভেম্বর ২০১৮ | সংবাদটি ৭৬১৯০ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
লিখতে বসেছি ঠিকই, কিন্তু লিখতে পারছিনা। আমার খুবই প্রিয় একজন মানুষ ফোন করে বার বার ডিষ্টার্ব করছিলেন। তার কথা হচ্ছে তার সাথে কথা বলতে হবে। বললাম কথা, সে অনেক কথা। কথা শেষ করে আর লিখতে ইচ্ছে করছেনা। গান শুনার চেষ্টা করলাম। এখন গান শুনার জন্য টেপ রেকোর্ডার অথবা ওয়ালকম্যান ব্যবহার করতে হয়না। মোবাইলে টিপ দিলেই গান বেজে আসে। গেলাম ইউটিউবে- টিপ দিলাম, চলে আসে শাহ আব্দুল করিমের গান।
“কাছে নেওনা দেখা দেওনা আর কত থাকি দূরে., কেমনে চিনিবো তোমারে– মুর্শিদ ধনহে— কেমনে চিনিবো তোমারে—। আমি তন্ত্র মন্ত্র করে দেখি তার ভিতরে তুমি নাই—,শাস্ত্র গ্রন্থ পড়ি যত আরো দূরে সড়ে যাই—-, কোন সাগরে খেলতে চুলাই ভাবতেছি তাই অন্তরে—- কেমনে চিনিবো তোমারে—-, মুর্শিদ ধনহে— কেমনে চিনিব—তোমারে—, বাউল অব্দুল করিম বলে—- দয়া করো আমারে—-, নত শীরে করো জুড়ে বলি তোমার দরবারে—–। ও মুর্শিদ— ভক্তের অধীন—– হও চিরদিন থাক ভক্তের অন্তরে— কেমনে চিনিব তোমারে— মুর্শিদ ধনহে— কেমনে চিনিব তোমারে——-।
শাহ আব্দুল করিমের অনেক গান আমি বুঝিনা। এই যে— ও মুর্শিদ– ভক্তের অধীন — হও চিরদিন– থাক ভক্তের অন্তরে—। এখানে গুরুকে বলছেন ভক্তের অধীন হও তুমি,— কেউই কিন্তু ভক্তের অধীন হতে চায়না। কেন চায়না? কারণ অধীনতা পরাধীনতা কেউই পছন্দ করেনা। গানের কথা আর বদরুদ্দুজা স্যারের রাজনীতির কথার মধ্যে কত যে মিল পাঠকরা কি খুঁজে পাবেন? একজন বদরুদ্দুজা চৌধুরী সাহেব কিন্তু বাংলাদেশের চিকিৎসক। হাজার হাজার চিকিৎসককে ঢাকা শহরের রাস্তাঘাটে দেখা যায়। কয়জন বদরুদ্দুজা হতে পেরেছেন? বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে জিয়াউর রহমান সাহেব বদরুদ্দুজা চৌধুরী সাহেবকে বিএনপির মহাসচিব বানিয়েছিলেন, তারপর তিনি মন্ত্রী হয়েছেন, এমপি হয়েছেন, সংসদ উপনেতা হয়েছেন, রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। ছেলে মাহীকে নেতা বানিয়েছেন, কিসের জন্য? কার কারণে? বিএনপির কারণে? বিএনপির কারণে যদি এত কিছু হন শ্রদ্ধেয় বদরুদ্দুজা চৌধুরী স্যার তাহলে আজ তিনি কি করে এ দলের বিরুদ্ধে কথা বলেন? মানুষের নুন্যতম কৃতজ্ঞতাবোধ তো থাকা দরকার। পৃথিবীতে যে দু‘তিনটি ডিগনিফাইড প্রপেশন রয়েছে তার মধ্যে বেষ্ট হচ্ছে চিকিৎসা পেশা। মানুষ এখনো এই পেশাকে সম্মানের সাথে দেখে, সমীহ করে। অনেকেই বলেন তারেক রহমান সাহেবের নাকি দোষ আছে। মানলাম সেটি। কিন্তু চৌধুরী সাহেব? যার বাবার কারণে আজ এ পর্যন্ত এসেছেন তার ছেলে যদি একটু বিয়াদবী করেই ফেলে সেটাকে কি কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায়নি? আমি অবাক হয়েছি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন হাজার হাজার মানুষ এ বিএনপি থেকে উপকৃত হয়েছে, টাকা পয়সা কামিয়েছে কিন্তু বিএনপির দুর্দিনের সময় তারা নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখেছেন। এক ব্যবসায়িকে জিজ্ঞাস করেছিলাম আপনি তো বিএনপির সময়ে টাকা কামিয়েছেন প্রচুর, তারেক রহমান সাহেবের সাথে যোগাযোগ হয়? তিনি বলেছিলেন এখন আওয়ামীলীগের সাথে লাইন মারলে দু টাকা রোজগার হবে বুঝলেন সাংবাদিক সাহেব, আপনি তো ব্যবসা বুঝেননা। এর জন্য সবাইকে বিগড়ে দেন। আমার মত ব্যবসায়ি হোন দেখবেন লাইফ অনেক সহজ হবে——–।
প্রিয় পাঠক, বিএনপির দুর্দিনে কেউ নেই বিএনপির পাশে। আজ অনেকেই বলেন বিএনপির দুর্দিনে বিএনপির পাশে দাঁড়িয়েছেন কামাল হোসেন সাহেব। আমি কামাল হোসেন সাহেবের এ পাশে থাকাটা কে বিএনপির দুর্দিন হিসেবে দেখিনা, কারণ বিএনপির এখন দুর্দিন নয় এখন গনতন্ত্রের দুর্দিন চলছে, মানুষের নিরাপত্তার দুর্দিন চলছে, সভ্যতার দুর্দিন চলছে। মানুষ সভ্যতার ইতিহাসে দিনের পর দিন কোথায় খুন হয় গুম হয়? ফেইসবুকে লেখালেখি যিনি করেন তাকেও বাসা থেকে সাদাপোষাকধারীরা তুলে নিয়ে যায়! বদরুদ্দুজা স্যার এ সবের প্রতিবাদ না করে তিনি সরকারের সাথে হাত মিলিয়েছেন। তিনি বিএনপিকে তারেক রহমান সাহেবকে শিক্ষা দিতে চান, শিক্ষা তো অনেকভাবেই দেয়া যায়। জীবনের এই সন্ধ্যাবেলায় এসে কি শিক্ষা তিনি দিবেন? আজ যা করে যাবেন তাই তো মানুষ স্বরণ রাখবে। জীবন চলার পথে অনেক কিছুই হয়। আমার ইদানিংকার লেখা পড়ে অনেকেই বলছেন আমি নাকি বিএনপিতে যোগ দিয়েছি, কে কি বলেন তাতে আমার কিছুই যায় আসেনা। বিএনপি যা করেছে তারেক রহমান সাহেব যা করেছেন তা থেকে তিনি শিক্ষা নিবেন কি-না আমি জানিনা, তবে শিক্ষা নেয়া উচিৎ। ভূল ভ্রান্তি মানুষেরই হয়। ভূল থেকে শিখতে হয়। রাজনীতিতে ব্যাক্তিগত শত্রু বানানোর কি কোনো দরকার আছে? রাষ্ট্র চালাতে গেলে সব সেক্টরে মানুষ লাগে। তারেক রহমান সাহেবের আশে পাশে যারা চলাফেরা করেন তাদেরকে হয়তো তিনি ছাড়তে পারেননা। তবে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু টেলেন্ট মানুষকে রাখতে হয়। আমি প্রায়ই বলি বিএনপির ফরেন উয়িংয়ে লোক নেই। এক শমসের মুবিন চৌধুরী সাহেব ছিলেন তিনি নাকি তারেক রহমান সাহেবের কারণে বিএনপিকে ডিভোর্স করে চলে গেছেন। আজ যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে শমসের মুবিন চৌধুরী কি বিএনপি থেকে চলে যেতেন? কখনো না। কারণ ক্ষমতা, ক্ষমতা থাকলে মানুষ এক চুল পরিমান নড়েনা। আরেকটি বিষয় আমি দেখেছি বিএনপি দীর্ঘদিন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল কিন্তু তাদের ব্যাপারে মিডিয়ায় কেউ কিছু লিখতে চায়না, যারা মিডিয়ায় ছিলেন যারা সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তারাও আজ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। অথচ আওয়ামীলীগ সরকারের সব কিছুই আছে তাদের মিডিয়া থেকে শুরু করে কোনো লোকেরই অভাব নেই। আমি অবাক হয়েছি ঐক্যফ্রন্টের মিটিং শেষ হয়নি কিন্তু জুস খাওয়ার খবর সোস্যাল মিডিয়ায় চলে এসেছে। লন্ডনেও আওয়ামী মিডিয়া অনেক ষ্ট্রং। গাফফার ভাই থেকে শুরু করে সবাই আওয়ামী সরকারের পক্ষে লিখেন। অথচ শফিক রেহমান সাহেব লন্ডনে আছেন তিনি কিছুই লিখছেননা। শফিক রেহমান সাহেব এমন ভয় পেয়েছেন যে সরকারের নুন্যতম অন্যায় কাজের কোনো গঠন মূলক সমালোচনা করতে চাননা। আমি শফিক রেহমান সাহেবের জন্মদিন লন্ডন চ্যানেল আইর ষ্টুডিও তে লাইভ উদযাপন করেছিলাম। এটি নিয়ে সরকারের কত কথা। যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতা আমাকে বলেছিলেন তুমি আওয়ামী সরকারের দৃষ্টিতে গর্হিত অপরাধ করেছ শফিক রেহমানের জন্মদিন পালন করে! আমি বলেছিলাম গাফফার ভাইর জন্মদিনও তো আমি পালন করেছি কোথায় বিএনপি তো কোনো সমালোচনা করেনি। নেতার কোনো জবাব ছিলনা।
সে যাক, বি চৌধুরী সাহেব যখন রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন তখন আমার কাছে কেন জানি মনে হয়েছিল তারেক রহমান সাহেবের কারণে বি চৌধুরী সাহেবের মত মানুষ বিএনপিতে থাকতে পারলেননা। কারণ অনেকেই বলেছেন তারেক রহমান সাহেব নাকি সিনিয়র নেতাদের শ্রদ্ধা করেননা। এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে বলবো তারেক রহমান সাহেবের উচিৎ হয়নি সিনিয়র নেতাদেরকে অশ্রদ্ধা করে কথা বলা। কারণ আমরা যে সমাজে বসবাস করি সে সমাজের সিনিয়র লোকজন কি চান বয়স হয়ে গেলে একটু সালাম আদাব এই তো, সিগারেট টানলে সিনিয়রদের দেখলে সিগারেট ফেলে দেয়া, কথা বলার সময় শ্রদ্ধা রেখে কথা বলা। ভূল হলে বলা উচিৎ মাফ করে দিবেন স্যার। আমি তো এ জীবনে অনেক মাফ চেয়েছি। মা বাবা ভাই বোন আত্নীয় স্বজন এমন কি স্ত্রী সবার কাছে সরি বলতে হয়। স্ত্রীর কাছে সরি বলেছি। সুন্দরী মহিলার দিকে থাকিয়েছি স্ত্রী গেল ক্ষেপে! কি করবেন বাসায় আসার পর স্ত্রী কথা বলেনা। জিজ্ঞাস করলাম কি হয়েছে? বলে তুমি আমাকে পাশে রেখেও সুন্দরী ঐ মহিলার দিকে থাকালে কেন? বলেছি যাও ভূল হয়েছে আর কোনোদিন কারো দিকে থাকাবোনা। আসলে তুমিই এ পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দরী মহিলা। স্ত্রী খুশী। উপায় নেই। আপনি যদি পাবলিক সার্ভিসে থাকেন সরি বলা ছাড়া উপায় নেই। আমি জানিনা তারেক রহমান সাহেব কত বড় অন্যায় করেছিলেন বি চৌধুরী স্যার অথবা মাহি বি চৌধুরীর প্রতি? যত বড় অন্যায়ই করেননা কেন বদরুদ্দুজা স্যার এ মূহুর্তে সরকারের সাথে গিয়ে সরকারের সাথে যে আপোষ করেছেন তাতে কি আমরা ধরে নিব বদরুদ্দুজা স্যার অনেক স্বার্থপর একজন রাজনীতিবীদ? যিনি ব্যাক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন বেশী! জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলী দিয়ে? তিনি বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নাকি থ্রি ইন ওয়ান। বলতেই পারেন। এটি চৌধুরী স্যারের ব্যাক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু যে মুহুর্তে জাতি নিমজ্জিত খুন গুমে সে মুহুর্তে রাজনীতিবীদদের আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা নেয়া উচিৎ। আমি জানিনা বি চৌধুরী স্যার কোন রাজনীতি করছেন। তবে আমার বিশ্বাস তিনি তার ভূল বুঝতে পারবেন এবং দেশের গনতন্ত্রের স্বার্থে তিনি গঠনমূলক বক্তব্য রাখবেন। আমি বলছিনা তিনি বিএনপিতে জয়েন করেন, তিনি তার দল বিকল্পধারা থেকেই সরকারের গঠনমূলক সমালেচানা করবেন এটাই জাতি আশা করে।
লেখার কৈফিয়তঃ গত লেখার আমার হেডিং এর অনেকেই সমালোচনা করেছেন। আমার যন্ত্রণাদায়ক বন্ধু মাশুক ইবনে আনিস আমার লেখায় উৎসাহ দেন। প্রায়ই এটা সেটা লিখেন আমি তাকে ধন্যবাদ দেই। কিন্তু এবার পুরো লেখাটি যখন আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গেছে তখন বন্ধু মাশুক ও বিগড়ে গিয়ে লিখেছেন আমার মত দায়িত্বশীল মানুষের কাছ থেকে ”ফালতু সংলাপ” এ রকম হেডিং তিনি আশা করেননা। আমি প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি যদি আমার হেডিং এ কারো মনে আঘাত দিয়ে থাকে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে কাউকে অশ্রদ্ধা করে কোনো কিছু লিখতে চাইনা। কারণ ফেইসবুক সোস্যাল মিডিয়ায় অনেকেই ইতরের মত লিখেন, বাবার সমান ডঃ কামাল হোসেন সাহেব, বাবার সমান বাঘা কাদের সিদ্দিকী সাহেবকে যেভাবে তুচ্চ তাচ্ছিল্য করে লিখেন তাতে আমার মনে এই ধারনা আসে, হয় তাদের জন্মের সমস্যা নতুবা তারা এক জেনারেশন শিক্ষিত হয়েছেন। আমাকে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন অনেকেই বলেছেন একমাত্র বাংলাদেশে নাকি জাত বংশ খোঁজা হয়, পৃথিবীর আর কোথাও এত জাত বংশ খোঁজা হয়না। সেটি আমিও এক সময় ভাবতাম, সৈয়দ, চৌধুরী, খান, বাহাদুর শেখ, আলী মিয়া, বেপারী, সওদাগর সব কিছুই বাংলাদেশে। বাংলাদেশে দেখবেন চৌধুরী বাড়ী. জমিদার বাড়ী, সৈয়দ বাড়ী, সাব বাড়ী, দারোগা বাড়ী, আগে হুমায়ুন আহমেদ সাহেবের নাটকে বলা হতো হাত মিলানোর সময় পরিচয় দেয়ার সময় আমি অমুখ বিএবিএড, বিএবিএসসি, এমকম, ইত্যাদি, এখন অবশ্য এসবের রেওয়াজ নেই। এখন মোটামুটি শিক্ষিত হয়ে গেছে মানুষ। বৃটেনেও সিআরবি চেকের মাধ্যমেই সব কিছু চেক করে নেয় বৃটিশরা। যারা ইজ্জত সম্মান রেখে কথা বলেনা তাদেরকে বুঝতে হবে সে এক জেনারেশন শিক্ষিত নতুবা তার বংশ সমস্যা, এক জেনারেশন যদি শিক্ষিত হয় তাহলে বলা হয় গোবরে পদ্মফুল, আসলে কথাটি সর্বান্তকরণে মিথ্যা। গোবরে কখনোই পদ্মফুল ফুটেনা, গোবরে গোবরই থাকে। তিন জেনারেশন যদি শিক্ষিত হয় তাহলে আর বংশ পরিচয় লাগেনা আপনি আত্নীয়তা করতে পারেন। ইদানিং তো এসবের কিছুই কেউ ধার ধারেনা। চৌধুরী , সৈয়দ , গোলাম সবই সমান। সবই সমান হলে চলবেনা। বাংলাদেশের মত দেশে সব সমান হলে যা হয় তাই ঘটছে এখন বাংলাদেশে। খুন গুম রাহাজানী চুরি ডাকাতি কেন হবে? রাজনীতিতে নষ্টদের জয়জয়কার কেন? এর জন্য দায়ী কারা? পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা যে ভাষায় গালি দেয় সে ভাষায় গালি কেন দিবে? কাউকে গালাগালি করা ঠিক? মোটেই ঠিকনা। শিষ্টাচার, ভদ্রতা, নম্ররতা বলতে কি কিছু অবশিষ্ট আছে? নেই। মাশুক ইবনে আনিস সাহেব বলেছেন রাষ্ট্রীয় ব্যপার নিয়ে লিখতে হলে অবশ্যই হেডিং এর ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বার্মিংহামের আওয়ামীলীগ নেতা মিসবা সাহেব লিখেছেন আমি ইদানিং কোনো কিছু পাওয়ার আশায় নাকি অবৈধ খুন গুমের সরকার বলছি। মিসবাহ সাহেবের সাথে আমার পরিচয় বিভিন্নভাবে। তিনি সমাজের জন্য কাজ করেন। আমার ভালোই লাগে। দেশ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংগঠনের তিনি চেয়ারম্যান। বছর তিনেক আগে দেশ ফাউন্ডেশন বিজনেসম্যান /ওমেনদের এওয়ার্ড দিয়েছিল সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যমরুন। বাঙালী কোনো অনুষ্ঠানে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি এটি মিসবাহ সাহেবই বোধহয় প্রথম ইংলেন্ডে করেছেন। তার জন্য তাকে আমি সমীহ করি, এবং সবিনয়ে বলতে চাই মিসবাহ ভাই আমার জীবনে আর চাওয়া পাওয়ার কিছুই নেই, প্রিন্ট মিডিয়া থেকে ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, ১০/১২ বছর চ্যানেল আই ইউরোপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে কাজ করার পর আর কি চাওয়ার থাকতে পারে? কোনো দলের দালালী করার ইচ্ছে আমার নেই। আজ আওয়ামীলীগ যা করছে কাল যদি বিএনপি এসে করে আমার প্রতিবাদ আমি করবোই। কারণ আমি তো কোনো দল করিনা। কোনো বিশেষ দলের প্রতি আমার কোনো দূর্বলতা নেই, তা ছাড়া এমপি মন্ত্রী হওয়ার শখ নেই আমার। টাকা পয়সার প্রতি কোনো দূর্বলতাও নেই। কারো দুটাকা মারিনি। বৃটেনে জেল খাটিনি, নাম পরিবর্তন করিনি। নিজের কথা এর চাইতে বেশী বলার দরকার নেই। মৃত্যুর পর যেন আপনারা বলেন আমি সৎ ছিলাম। একটি কথা না বলে পারছিনা, ভূল হলে ক্ষমা করবেন গত ১০ বছর ধরে আওয়ামলীগ ক্ষমতায়, আমার কিছু বন্ধু বান্ধব আমাকে ধরেছিলেন কিছু কাজ করে দেওয়ার জন্য, কিছু মানুষ চেয়েছিলেন ব্যংক থেকে লোন এনে দেয়ার জন্য, যে অভিজ্ঞতা হয়েছে যেখানে আওয়ামীলীগের বড় বড় উলামায়ে কেরামরা রয়েছেন, সেখানে আমার মত মানুষ তো চুনোপুটি। দেশ এখন আওয়ামীলীগের, আওয়ামীলীগরাই লুটে পুটে খান। আমরা দেখি দুর থেকে। লন্ডনে আপনারা যারা আওয়ামীলীগ করেন তাদের জন্য আমার দুঃখ হয়, বন্ধু মাশুক ইবনে আনিসের জন্য দুঃখ হয় কিছুই করতে পারেনি আওয়ামীলীগ করে। অথচ মাশুক ইবনে আনিসের চেয়ে লেস কোয়ালিটর মানুষ আপনাদের দলের বিরাট নেতা। সে যাক এসব নিয়ে কথা বলতে চাইনা। দয়া করে আমাকে কেউ বলতে আসবেননা আমি কোনো কিছু পাওয়ার আ্শায় লিখছি, বা কাজ করছি। ১০/১২ বছর টেলিভিশন চালানোর পর আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে লোন আছে তিন লক্ষ পাউন্ডের মত। আমি টাকা খরচ করে বৃটেনের বাঙালী কমিউনিটিকে টেলিভিশন দেখিয়েছি। বিনিময়ে কারো কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। আপনাদের কোনো মন্ত্রী এমপিদের কাছে যাইনি, কোনো কাজ করানোর জন্য। অনেকেই আমাকে বলেছেন দেশে গিয়ে হালুয়া রুটিতে ভাগ বসান। কার টাকায় ভাগ বসাবো? পৃথিবীতে কিছু মানুষ আছে যারা সারা জীবন অর্থকষ্টে ভোগে কিন্তু সততা নিয়েই বেঁচে থাকে। দোয়া করবেন আমার জন্য বাকী জীবনটা যাতে কারো কাছে হাত পাততে না হয়। কারো টাকা যেন মারতে না হয়। দেশকে লুটেপুটে যারা খাবে তাদের নাম হচ্ছে আওয়ামলীগ তাদের নাম হচ্ছে বিএনপি, তাদের নাম হচ্ছে জাতীয় পার্টি। মোট কথা ক্ষমতায় থাকতে হবে। গত ওয়ান ইলেভেনের সময় কিন্তু দুর্নীতির দায়ে বায়তুল মোকারম মসজিদের খতিবকে দুদক গ্রেফতার করেনি। সিলেটের দরগা মসজিদের ঈমাম সাহেবের বাসা বাড়ী তল্লাশী করেনি।
আজিজুর রহমান দারা যিনি এক সময় সিলেটে ছাত্র নেতা ছিলেন, ছিলেন তিনি স্মার্ট। লন্ডনে ৯০ ইংরেজীতে আসার পর দেখা হয়েছিল দারা ভাইর সাথে, তারপর আর দেখা হয়নি। শুনেছি এখন তিনি মানচেষ্টারের ওল্ডহামে বসবাস করেন। নিবেদিত আওয়ামীলীগার। দারা ভাইও বলেছেন হেডিং এর ব্যাপারে মনযোগী হতে। চেষ্টা করবো আপনাদের কথা রাখতে। তবে চিন্তা করছি লেখালেখি অব্যাহত রাখবো কি-না? কারণ দোস্ত তো নেই দুশমনই বাড়ছে বেশী। তা ছাড়া যারা আওয়ামীলীগ করেন তারা তো আর দারা ভাইর মত স্নেহ ছোট ভাই বলে আমাকে অনুরোধ করবেননা। পারলে গালী দিবে নতুবা ক্ষতি করার চেষ্টা করবে।
মুজিবুল হক মনি ভাইও লিখেছেন, আমাকে এডভাইস দিয়েছেন ওয়ান ইলেভেনের সরকারের দিকে তাকালেই সব কিছুর খবর পেয়ে যাবো। তা ছাড়া তিনি লিখেছেন ডঃ কামাল হোসেন সাহেবের উদ্দ্যেগটি যে ফালতু হবে তা নাকি কামাল হোসেন সাহেব নিজেই জানতেন। মনি ভাইকে সবিনয়ে বলতে চাই, যে ৭ দফা দাবী নিয়ে অবৈধ সরকারের কাছে ঐক্যফ্রন্ট গিয়েছিল তার একটি দাবী ও তারা মানবেনা। তাহলে কি তারা এবারও গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকতে চায়? আমি এখানেই বলছি সরকারই সংলাপকে ফালতুতে রুপান্তরিত করেছে। ফালতু সংলাপে কাজ হবেনা। রাজপথে নামতে হবে। আন্দোলন ছাড়া সরকার কোনো দাবী মানবেনা। অনেকেই আশংকা করছেন পরিস্থীতি ভয়াবহ হবে। আন্দোলন হলে তো পরিস্থীতি ভয়াবহ হবেই। সরকার যদি কোনো কিছু না মানে তাহলে কে কি করবেন মনি ভাই? এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে নুর হোসেন প্রাণ দিয়েছিল। সরকার চায় পরিস্থীতি উত্তপ্ত হোক তারপর দেখা যাবে কি হয়? সরকার চায় আন্দোলনে লাশ পড়ুক কিছু। বাংলাদেশের মানুষের তো জান মালের কোনা দাম নেই———।
সর্বশেষ গত লেখায় আমার লেখার পক্ষে যিনি দাঁড়িয়েছেন লন্ডনের বাসিন্দা, রাজনীতি সচেতন শাহীন রশীদ। শাহীন লন্ডনে মেইনষ্ট্রীম রাজনীতি করেন। গত কাউন্সিল নির্বাচনে শাহীন কাউন্সিলর হিসেবে প্রতিদন্ধিতা করেছিলেন, পাশ করতে পারেননি। রাজনীতি সচেতন শাহীন বাংলাদেশের রাজনীতির খবরাখবর রাখেন আমাকে দেখলেই বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। শাহীনের বাংলাদেশের প্রতি ভাবনা আমাকে ভাবায়। আমি ভাবি অনেক কিছুই। তবে আমি সরকারের একগুয়েমী সিদ্ধান্ত নিয়ে শংকিত, সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এটাই আমি প্রথমত চাই এটা আমি দ্বিতীয়ত চাই, এটা আমি তৃতীয়ত চাই, এটাই আমি শেষ পর্যন্ত চাই।
লেখক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
লন্ডন তারিখ ৭/১১/২০১৮ ইংরেজী