নির্বাচন কি দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিবে?
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:২২:২৬,অপরাহ্ন ২৭ নভেম্বর ২০১৮ | সংবাদটি ৮৬৪৪৩ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
ডিসেম্বর ২০১৮ এর নির্বাচন কি নিরেপেক্ষ হবে? আদৌ কি নির্বাচন হবে? সরকার কি চায়? নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামীলীগের কি ভরা ডুবি হবে? নির্বাচন কমিশনারের কি মাথায় গন্ডগোল আছে? বিদেশী পর্যবেক্ষকরা মন্তব্য করতে পারবেননা, সাংবাদিকরা লাইভ করতে পারবেননা, তারেক রহমান স্কাইপিতে বিএনপির মনোয়ন-প্রার্থীদের সাথে কথা বলতে পারবেননা, এত সব প্রশ্ন যখন আমার পাঠকরা ফোন করে জিজ্ঞাস করেন তখন কি উত্তর দেয়ার আছে? তা ছাড়া কামাল হোসেন, মান্না, সুলতান, রেজা কিবরিয়ারা যখন ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেন তখন নাকি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যায়? তখন নাকি আদর্শের রাজনীতি মুখ থুবড়ে ডাষ্টবিনে পড়ে থাকে! আমি আমার লেখায় এর আগেও এ রেফারেন্স উল্লেখ করেছি, ঠিক রেফারেন্স নয়, সিলেটি আঞ্চলিক ভাষায় একটি ডায়লগ – “পরে আপনে বুঝে যে তারে কয় শাউধ, আর দু হাতে চুলকায় যে তারে কয় দাউদ” অর্থাৎ পর এবং আপনাকে যে বুঝে তাকে সাধু বলা হয়, আর দুহাতে চুলকালে তাকে বলে দাউদ। আমি খুব গভীরভাবে লক্ষ্য করেছি আওয়ামীলীগের বিপক্ষে কেউ যদি সমালোচনা করে সেটি গঠনমুলক হলেও তাকে বলে রাজাকার। আওয়ামীলীগের পেইড লেখকদের লেখা পড়লে আমার উত্তর দেয়ার ইচ্ছে করে। কিন্তু উত্তর দিয়ে লাভ কি? আমার তো কোনো লাভ নেই বরং ক্ষতি। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা আমাকে ফলো করে, আমার লেখা নিয়ে অনেকে গবেষণা করে। জিজ্ঞাস করে আমার বাপ দাদার নাম কি? বিয়ে কয়টি করেছি, বাচ্চা ক‘টি আছে ইত্যাদি। সেদিন শুনলাম একজন বললো, সত্য মিথ্যা জানিনা আমার নাকি সব কিছু সংগ্রহ করা হচ্ছে, বলেছিলাম কোনো লাভ নেই। বললেন লাভ আছে, আপনার বিরুদ্ধে আমরা ফেইসবুকে ভিডিও রেকোডিং ছেড়ে দেব। বলেছিলাম ছাড় আমার কিছুই নেই। সততার সাথে জীবন কাটিয়েছি। কারো দুটাকা মারিনি, দুর্নীতি করিনি, আমার ভয়ের কিছুই নেই, আমি এসব কেয়ার করিনা, বলেছি আমাকে ভয় দেখাবেননা। বলেছিলেন বাংলাদেশে যাবেননা? বলেছি নাইবা গেলাম বাংলাদেশে তো কি হবে? বাংলাদেশ কি সপ্তম আশ্চর্যের একটি? বাংলাদেশে কি মক্কা মদিনা আছে? বাংলাদেশে কি নবীর কবর আছে? যে জিয়ারত করলে বেহেস্তে যাবো? বাংলাদেশটা হচ্ছে বসবাসের অনুপোযোগী একটি দেশ, সব কিছুতেই ভেজাল। খাবারে ভেজাল, লেখা পড়ায় ভেজাল, শিক্ষকের মধ্যে ভেজাল, রাজনীতির মধ্যে ভেজাল, মোল্লা মুন্সীর মধ্যে ভেজাল, ডাক্তারদের মধ্যে ভেজাল, চলাফেরায় ভেজাল, কথা বার্তায় ভেজাল, রাজনীতিতে ভেজাল, সরকার বিরোধীদলে ভেজাল। নেতা নেত্রীদের মধ্যে ভেজাল, একজন আরেকজনের মুখ দেখেননা।
মুখ দেখাদেখি অবশ্য বৃটেনেও এক সময় টনি ব্লেয়ার আর গর্ডন ব্রাউনের মধ্যে হতো না, সালটা আমার মনে নেই। লেবার পার্টির কনফারেন্স চলছিল। পাবলিককে দেখানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার আর অর্থমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন দুজনই এক সাথে আইসক্রীম খাচ্ছিলেন সে সবের ছবি ফলাও করে পত্রিকাগুলো প্রচার করেছিল। তো কনফারেন্সে টনি বক্তৃতা করছিলেন তিনি বলেছিলেন গর্ডন আমার বন্ধু আমাদের মধ্যে খুবই সুন্দর সম্পর্ক। স্কৃনে টনির যখন বক্তৃতা দেখানো হচ্ছিল তখন টনি ব্লেয়ারের স্ত্রী শেরী ব্লেয়ার কোন একটি টিভির সাথে সাক্ষাতকার দিচ্ছিলেন, শেরী তার স্বামীর বক্তব্য শুনে বলেছিলেন টনি এসব কি বলছেন, আমরা থাকি ১০ নম্বার ডাউনিং ষ্ট্রীটে , গর্ডন ব্রাউন থাকেন ১১ নম্বার ডাউনিং ষ্ট্রীটে। তিনি যখন ১০ নাস্বার ডাউনিং ষ্ট্রীট ক্রস করেন তখন পত্রিকা দিয়ে মুখ ঢেকে চলে যান। আসলে রাজনীতির সম্পর্ক বড়ই জঠিল। স্বার্থ, ক্ষমতা মানুষকে অন্ধ করে ফেলে। অবশ্য টনি ব্লেয়ার আর গর্ডন ব্রাউনের সম্পর্ক ক্ষমতায় আসার আগেই নষ্ট হয়েছিল। সেটি অন্য প্রসংঙ্গ আরেকদিন লেখা যাবে।
যে কথা লিখছিলাম বাংলাদেশে আমি না গেলেও পারবো। মাঝে মধ্যে আমি ভাবি এ কোন গণতন্ত্রের পৃথিবীতে বাস করি? আমার মতামত দিতে পারবোনা, আমার বিশ্বাস থেকে কথা বলতে পারবোনা। ভিন্নমত হলে তাকে সরিয়ে দিতে হবে। সেদিন একজন বললো নির্বাচন আসলেই কেন এরশাদ সাহেকে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়? বলেছিলাম থেরাপী দেয়ার জন্য হয়তো। কারণ এরশাদ সাহেব জোট থেকে বের হতে চাইলেই তাকে থেরাপী দেয়া হয়। কি বিচিত্র সরকারের কাজ কারবার? আওয়ামীলীগের লোকেরা বলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন অনেক সার্প । তিনি এখন রাজনীতি বুঝেন, তিনি এখন এডমিন বুঝেন, তিনি এখন বিশ্বনেত্রী। এ সব শুনলে আমি গান শুনি, ঐ যে গান যেটিতে বলা হয়েছে ”বন্ধু আমার করো তোমার মনে যাহা লয়”। আওয়ামীলীগের এখন মনে যাহা লয় তাহাই করছে।
সে যাক, আসল কথায় আসি। নির্বাচন কি নিরপেক্ষ হবে? আমার ব্যাক্তিগত অভিমত হচ্ছে, নিরপেক্ষ হবেনা। আওয়ামীলীগ চাচ্ছে কোনোভাবে ৩০ ডিসেম্বর পার করে দিতে, তারপর তাদের ইচ্ছেমত পিটিয়ে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করতে। আমি গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি বর্তমান আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দের কথা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারে পূর্নরায় ফিরে না আসলে চামড়া থাকবেনা আওয়ামীলীগের। সরকারী কর্মকর্তাদের বলা হচ্ছে যারা গত দশ বছরে চাকুরী পেয়েছেন, চাকুরীর প্রমোশন পেয়েছেন, বিএনপি যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে কারো চাকুরী থাকবেনা। অতএব সরকারী কর্মকর্তারা ও ভয়ে আছেন। ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডঃ জাফরউল্লাহ চৌধুরী বলেছেন সরকারের ভীত নড়ে গেছে, র্যাব, পুলিশ ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সাথে যোগাযোগ করা শুরু করেছে। লন্ডনে তারেক রহমান সাহেব বলেছেন, কোনো সরকারী কর্মকর্তাদের অন্যায়ভাবে চাকুরীচ্যুত করা হবেনা। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডঃ কামাল হোসেন সাহেব, তিনি বলেছেন, নির্বাচনের দিন কেন্দ্র পাহাড়া দিতে। আমার ভয় হচ্ছে কেন্দ্র পাহাড়া দিতে গেলেই তো সমস্যা দেখা দিবে। কারণ আওয়ামীলীগ মরিয়া হয়ে উঠছে ক্ষমতায় থাকার জন্য। তারা বলছে, দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছে। তারা অনেক উন্নতি করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে ভাষায় বলেন, মোবাইল কে দিয়েছে? ফোর জি, থ্রি জি কে দিয়েছে? ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড কে দিয়েছে? গুগল, ভাইবার, ফেইসবুক সবই তো আওয়ামীলীগের অবদান? সবই তো আমাদের জয় মামার অবদান? লন্ডনে যদি কেউ আমাকে বলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট মোবাইল এসব থেরেসা মে সরকার দিয়েছে তাহলে আমি তাকে কি বলবো? হয় তাকে পাবনার হেমায়েতপুরে পাঠাতে হবে, নতুবা পূর্ব লন্ডনের মাইলেন্ড্যের সেন্টক্লাইমেন্ট হাসপাতালে পাঠাতে হবে। গত বৃহস্পতিবার আমার পরিচিত এক বন্ধু একটি মোবাইল কিনেছেন, বললেন ৫৪ পাউন্ড তাকে প্রতিমাসে পে করতে হবে। কন্ট্রাক্ট হচ্ছে প্রতিমাসে আন লিমিটেড কল, আন লিমিটেড ট্যক্সট ম্যাসেজ এবং ৩০ জিবি ইন্টারন্যাট ফ্রি। সাথে মোবাইল হ্যন্ড সেটটি ফ্রি। দু বছরের কন্ট্রাক্ট। এখানে কিছুই ফ্রি নেই। ৫৪ পাউন্ডে সব কিছুই উদ্ধার করে নিচ্ছে মোবাইল কোম্পানীগুলো। বাংলাদেশে যারা মোবাইল বাবা, দরবেশ বাবা, জয় বাবা উনাদের তো ব্যবসায়িক লাভ রয়েছে। সেই সাথে বাংলাদেশের অশিক্ষিত মানুষদেরকে বলা হচ্ছে মোবাইল কিন্তু আওয়ামীলীগ দিয়েছে, হ্যা মনে রাখবা আওয়ামলীগের কথা। এত সস্তা বক্তব্য সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে যে কিভাবে দেয়া হয় আমি বুঝিনা। দেশে এক আতংক বিরাজ করছে কেউ মুখ ফুঠে কথা বলেনা। বলে আওয়ামীলীগ বাবারা কখন গাড়ীতে তুলে নিয়ে যাবে, নিয়ে গিয়ে ক্রস ফায়ারে দিয়ে দিবে। ক্রস ফায়ারে দিয়ে দিলে কি কিছু হবে? বদির কি কিছু হয়েছে? শুনেছি বদি নাকি সৌদিতে চলে গিয়েছিলেন ওমরা করতে, তিনি এখনো কি ওমরা হজ্ব করছেন? এটি উবায়দুল কাদের সাহেব ভালোই বলতে পারবেন।
আমাকে সেদিন আমার এক বন্ধু বলেছেন, আমি বর্তমান সরকারের উপর নাকি খুবই ক্ষেপা, বলেছি আমার কারো সাথে কোনো ব্যাক্তিগত মান অভিমান নেই। পেঠের ভিতরে যা হজম করে নিয়ে বসে আািছ যদি এ মুহুর্তে বাজারে ছাড়ি তাহলে অনেকেই বিব্রত হবেন। আমার ব্যাক্তিগত কোনো বিষয় বাজারে ছাড়তে চাইনা। কারণ আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক উবায়দুল কাদের সাহেব বলেছিলেন, বিচারপতি সিনহা সাহেব বই এখন পাবলির্শ না করে নির্বাচনের পরেই করতে পারতেন। আমি নির্বাচনের পরেই আমার ব্যাক্তিগত বিষয়টি না হয় বাজারে ছাড়বো বা ছাড়তে চাই। তখন দেখবো আওয়ামীলীগের হাই কমান্ড কি বলেন? বৃটেনে আসার পর আমি যখন প্রথম চাকুরীর জন্য ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিলাম তখন আমাকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিল ডাইজেস্টিং পাউয়ার কেমন? কনফিডিয়েনসিলিটি কতক্ষণ ধরে রাখতে পারবো ইত্যাদি। তবে বাঙালীদের ডাইজেস্টিং পাওয়ার নেই, কনফেডিয়েসিলিটি ওর্য়্ডাটি বুঝেনা, টপ টু বটম কেউ মানেনা। সেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মইনুল হোসেন সাহেবের ব্যাপারে বলেছেন, তাদের পরিবার নাকি তাকে নিয়ে বিব্রতবোধ করতো, মইনুল সাহেবের পরিবার নাকি পান্তাভাত খেত ইত্যাদি। তিনি বলেছেন, আরো অনেক কিছুই আছে পরে বলবো———–। সাংবাদিকরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে ৩২ খানা দন্ত বিকশিত করে হেসেছেন। কেউই বলেনি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমরা মইনুল হোসেন সাহেবের ব্যাক্তিগত বা পারিবারিক বিষয় জানার জন্য প্রেস কনফারেন্সে আসিনি।
সে যাক, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো কথার সমালোচনা করতে চাইনা। তিনি অন্যায় করতে পারেননা। তিনি যা বলেন সবই শিরোঃধার্য। তা ছাড়া ভয়ও আছে, কি কি আইন তারা করেছেন কোন বিপদে পড়বো। সব কিছু খেয়াল করে লিখতে হবে। ডিজিটাল আইন নিয়ে সম্পাদকরা মানব বন্ধন করেই খালাস পেয়েছেন। জানিনা কেন তারা মুখ বন্ধ করলেন? সত্য মিথ্যা জানিনা। শুনেছি নির্বাচন উপলক্ষ্যে নাকি সম্পাদক, লেখক, বড় বড় রিপোর্টাররা বেশ বড় অংকের উপঢৌকন পেয়েছেন, যার কারণে অনেকের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। যারা ঢাকায় সাংবাদিকতা করেন তাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধে রয়েছে। ওরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার বন্ধু হয়ে যায়। ওসব গোয়েন্দা সংস্থা তাদেরকে দিয়ে ঐসব দেশের পারপার্স সার্ভ করে। আমার কাছেও একবার এসেছিলেন একটি দেশের একজন মানুষ। কোনো এপয়েন্টম্যন্ট ছাড়াই তিনি আমার অফিসে এসে হাজির। বললাম কি চাই, কাকে চাই, বললেন বসতে পারি? বললাম, বসুন। আমার অফিসের দিকে থাকান, আমার দিকে থাকান। কারণ আমি সেজে গুজে বসেছিলাম কারণ আমার লাইভ টক শো ছিল। তিনি আমার টাইর দিকে অপলক দৃষ্টি নিয়ে কিছুক্ষণ তাকালেন এবং বললেন আপনার টাই খুবই সুন্দর। বললাম, ভাই সময় নেই, আমি একটু পরেই লাইভে যাবো। বলুন কি বলবেন? বললেন লেখা লেখি করেন? বলেছিলাম করি, তবে এখন আপাদত করছিনা, ভালো লাগেনা, টেলিভিশন নিয়ে ব্যস্ত আছি। বললেন শুনুন আমি একটি দেশের জন্য কাজ করি, আপনাকেও মাঝে মধে করতে হবে। বলেছিলাম আপনি অনেক নীচের লেভেলে চলে এসেছেন। আপনাকে আরেকটু উপরের লেভেল মেইন্টেন করতে হবে। বলেছিলেন উপরের লেভেল মেইন্টেন হচ্ছে। সবিনয়ে বলেছিলাম ভাই আমি কারো মাউথপীস হিসেবে কাজ করিনা। আমি যা করি বিবেকের তাড়ানায় করি। আপনি সময় নষ্ট করবেননা। আমি ওসবে নেই। তা ছাড়া আমার টাকা পয়সার অভাব রয়েছে কিন্তু নিজেকে বিসর্জন দিয়ে নিজের বিবেক বন্ধক দিয়ে নিজেকে বিক্রি করে এ জীবনে কিছু করবোনা এটা আমার বাবা আমাকে বলে গেছেন। বাংলাদেশের অনেক মানুষ বলে বাবা তাদের আদর্শ সেটি মুখে বলে আর আমি অন্তর দিয়ে বলি। আমি অনেক সাংবাদিক লেখককে চিনি যারা বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে কাজ করেন। নিজেকে বিক্রি করেন, তারা যেইসব ডিল করেন, আমি ওসব ডিল করতে পারিনা। করবোওনা কখনো। ভদ্রলোককে চা পানি পান করে বিদায় দিয়েছিলাম, তাপরের ঘটনা আজ আর লিখতে চাইনা প্রিয় পাঠক অন্যদিন লিখবো। তবে একটি কথা বলি ঢাকায় যারা বড় বড় সাংবাদিক লেখক ওরা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে নিজেকে বিক্রি করে। কিন্তু লেখার সময় দেখবেন, টক শোতে কথা বলার সময় দেখবেন, সব নীতি আদর্শ সে-ই লালন করে পালন করে! ঐ যে কথায় বলেনা চোরের মায়ের বড় গলা। একবার লন্ডনে এক দলের নেতার সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম নেতা চায়ের কাপে মদ পান করছিলেন কে একজন অন্য নেতার নাম নিয়ে নেতার সাথে কথা বলছিল, নেতা তখন বলেছিলেন আরে ওর কথা বলো না, সে তো সারাক্ষণ মদ পান করে। তিনি নিজেই চায়ের কাপে তখন মদ পান করছিলেন। মনে মনে বলেছিলাম হায়রে নেতা, আপনাদের পিছনে হাজার হাজার মানুষ শ্লোগান দেয় জীবন দেয়, কিন্তু আপনাদের কথা এবং কাজের মধ্যে কত যে তফাৎ।
নির্বাচন নিয়ে আমি শেষ কথা বলে লেখা শেষ করতে চাই। নির্বাচন কোনোভাবেই নিরপেক্ষ হবেনা। এ নির্বাচন কমিশনার সাহেব আওয়ামীলীগের নির্বাচন কমিশনার। পুলিশ কমিশনার সাহেব অথবা আইজি আওয়ামীলীগের! র্যারের প্রধান আওয়ামীলীগের! সেনাবাহিনীর প্রধান আওয়ামীলীগের! বিডিআরের প্রধান আওয়ামীলীগের। সরকারের প্রধান আওয়ামীলীগের। প্রশাসনের সর্বস্তরে যদি আওয়ামীলীগের লোক থাকে তাহলে নির্বাচন কি করে নিরপেক্ষ হবে? দেশবাসীকে, ভোটারকে মারামারির মধ্যে টেলে দিবেননা। কারণ ভোটের দিন ব্লাডশিট হবে। রক্তের বন্যা বইবে সারা দেশে। কত লোক মারা যাবে তার কোনো গ্যারান্টী কেউ দিতে পারবেনা। কারণ সরকার সাথে সংলাপে যে কথা হয়েছে সেটির একটিও সরকার মানছেনা, হর হামেশাই হামলা মামলা হচ্ছে, গ্রেফতার তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। যেখাানে নির্বাচন কমিশানর বলছেন, সাংবাদিক যেতে পারবেনা, বিদেশী পর্যবেক্ষক কোনো মন্তব্য করতে পারবেনা, কেউ লাইভ করতে পারবেনা, তাহলে কি ধরে নিতে পারিনা ”এখানে ডাল মে কুচ কালা হে”
বিঃ দ্রঃ এত কিছুর পরও যদি নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে হয়, করুন তবে আমি হলফ করে বলে দিতে পারি এ নির্বাচন নিরপেক্ষ হবেনা। কারণ কে একজন আমাকে ইনবক্স করেছে, সেখানে আমি লেখা দেখেছি ” আমার ভোট আমি দেব তোমার ভোটও আমি দেব সবার ভোট আওয়ামীলীগ দেবে।
অতএব ভোটের দিন তোমরা নিশ্চিন্তে বাড়িতে বসে থাকবা। আল্লাহ তালাহ বাংলাদেশের মানুষকে হেফাজন করুন। আমীন।
লেখক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
২৬ নভেম্বর ২০১৮ লন্ডন